আসসালামু ওয়ালাইকুম
আপনারা যারা ফ্রিল্যান্সিং (Freelancing) শুরু করতে চাচ্ছেন, তাদের জন্য আজ একটা রোড ম্যাপ শেয়ার করবো। প্রথমে দেখা যাক কি কি থাকছে আলোচনায়ঃ
১) ফ্রিল্যান্সিং কী?
২) আউটসোর্সিং কী?
৩) কীভাবে ফ্রিল্যান্সিং শুরু করবো?
৪) ফ্রিল্যান্সিং শুরু করার আগে কি কি ভাবতে হবে?
৫) ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস কী?
৬) কীভাবে ফ্রিল্যান্সিং কাজ পাবো?
৭) ফ্রিল্যান্সিং করতে কি কি লাগবে?
৮) ফ্রিল্যান্সিং এর সুবিধা ও অসুবিধা।
৯) ফ্রিল্যান্সিং কাদের জন্য?
ফ্রিল্যান্সিংঃ ফ্রিল্যান্সিং (Freelancing) এমন একটি পেশা যেখানে ইন্টারনেট এর মাধ্যমে কাজ করে টাকা উপার্জন করা যায়। একখানে নিজের মত করে স্বাধীন ভাবে কাজ করা যায় তাই এটাকে মুক্তপেশা ও বলা হয়। আমরা যারা কাজ করি তাদেরকে বলা হয় ফ্রিল্যান্সার।
আউটসোর্সিংঃ কোন কাজ কে অন্য কে দিয়ে বা কোন ফ্রিল্যান্সারকে দিয়ে যদি করানো হয় তাহলে তাকে বলে আউটসোর্সিং (Outsourcing)। কোন কাজ ফ্রিল্যান্সারকে দিয়ে করিয়ে নেয়া কে বলে আউটসোর্সিং। অর্থাৎ ক্লাইন্ট হলো আউটসোর্সার।
আশা করি, ফ্রিল্যান্সিং(Freelancing), ফ্রিল্যান্সার(Freelancer), আউটসোর্সিং(Outsourcing), আউটসোর্সার সম্পর্কে ভাল একটা ধারনা পেয়েছেন।
ফ্রিল্যান্সিং (Freelancing) ক্যারিয়ারঃ ফ্রিল্যান্সিং (Freelancing) কেন করবো এবং কিভাবে শুরু করবো??
- ফ্রিল্যান্সিং (Freelancing) ক্যারিয়ার গড়া যেমন কঠিন কাজ, তেমনি একজন সফল ফ্রিল্যান্সারের হলে কখনো পিছনে ফিরে তাকাতে হয় না।
- সফল ফ্রিল্যান্সারের সফলতা দেখলে সবাই ফ্রিল্যান্সার হতে চাই, কিন্তু সফলতার পিছনের গল্প শুনলে বুজা যায় কত ধৈর্য ধরে টাকার আশা না করে কাজে দক্ষ হওয়ার জন্য মাসের পর মাস সময় দেয়া।
- সফল ফ্রিল্যান্সারের ইনকাম এর কোন লিমিট নাই, একমাত্র নিজের মত স্বাধীন ভাবে কাজ করে সৎ পথে বেশী আয় করা যায় ফ্রিল্যান্সিং করে।
ফ্রিল্যান্সিং (Freelancing) শুরু করার জন্য প্রয়োজনীয় ধাপসমুহ নিচে দেয়া হলোঃ
- প্রথমে খুজে বের করতে হবে মার্কেটপ্লেসে কোন কোন কাজে চাহিদা বেশী।
- মার্কেটপ্লেসে চাহিদা আছে এমন কাজের মধ্যে আপনার কোন কাজ করতে ভালো লাগে। ভালো লাগা কাজ যদি সিলেক্ট না করতে পারেন তাহলে কয়েক দিন পর আর কাজ করতে ভালো লাগবে না।
- আপনার পছন্দের টপিক নির্বাচন করে কাজ শেখা শুরু করতে হবে। প্রথমে অনলাইন থেকে উক্ত বিষয়ের উপর দক্ষতা অর্জন করুন। ভূল করে কোন বিঘাপন দেখে কোর্স করতে যাবেন না।
- একটা রোড ম্যাপ বানান এবং সে মতে কাজ শুরু করুন। প্রয়োজন মনে করলে কিছু দিন কাজ করার পর কোন কোর্স করতে পারেন।
- ফ্রিল্যান্সিং করে কত দিনে, কত আয় করা যায় এসব চিন্তা না করে স্কিল ডেভেলপ করার দিকে মনোযোগী আপনি সফল হবেনই।
বর্তমান সময়ে কিছু চাহিদাসম্পন্ন টপিকঃ
- ডিজিটাল মার্কেটিং (Digital Marketing)
- সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন (Search engine optimization)
- ওয়েব ডিজাইন & ডেভলপমেন্ট (Web design & Development)
- গ্রাফিক্স ডিজাইন (Graphics design)
- ভিডিও এডিটিং (Video editing)
- ডাটা এনালাইসিস (Data analysis)
- ডাটা এন্ট্রি (Data entry)
- ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্ট (Virtual Assistant)
ফ্রিল্যান্সিং(Freelancing) মার্কেটপ্লেসঃ মার্কেটপ্লেস মূলত বায়ার এবং ফ্রিল্যান্সারদের মধ্যে মাধ্যম হিসেবে কাজ করে। মার্কেটপ্লেস সাইটগুলোতে বিশ্বের ভিবিন্ন বায়াররা তাদের প্রয়োজনীয় কাজটি করানোর জন্য ঐ কাজটিতে অভিজ্ঞ ও দক্ষ ফ্রিল্যান্সার খুঁজেতে মার্কেটপ্লেস বা ফ্রিল্যান্সিং ওয়েবসাইট এ আসে ।
কয়েকটি জনপ্রিয় মার্কেটপ্লেসঃ
- Fiverr
- Upwork
- Freelancer
- Peopleperhour
- Guru
- Toptal
- 99designs
- Belancer (বাংলাদেশি ফ্রিল্যান্সিং ওয়েবসাইট)
কীভাবে ফ্রিল্যান্সিং (Freelancing) কাজ পাবো?
চাকরির আবেদন করতে হলে যেমন প্রতিষ্ঠানের নিকট আপনার বায়োডাটা জমা দিতে হয় ঠিক তেমনি ফ্রিল্যান্সিং করতে হলেও আপনার একটি বায়োডাটা বা প্রোফাইল প্রয়োজন। আপনার বায়োডাটা দেখেই ক্লাইন্ট আপনাকে কাজ দিবে। তাই, প্রোফাইলটিকে এমনভাবে সাজাতে হবে যাতে ক্লায়েন্ট আপনার প্রোফাইল দেখেই আকৃষ্ট হয়।
ফ্রিল্যান্সিং (Freelancing) করতে যা যা লাগবেঃ
সবচেয়ে বেশী লাগবে ধৈর্য, ধৈর্য এবং ধৈর্য । কম্পিউটার চালানোর বেসিক স্কিল, (যেমনঃ MS Word, MS Excel, MS PowerPoint ) ইন্টারনেট, ইংরেজি ভাষার দক্ষতা, দক্ষতা অর্জন, আত্মবিশ্বাস, প্রবলেম সলভিং স্কিল, ফ্লেক্সিবিলিটি ইত্যাদি।
ফ্রিল্যান্সিং (Freelancing) এর সুবিধা ও অসুবিধা।
সুবিধাঃ সময়ের স্বাধীনতা, কাজের স্বাধীনতা, নিজের বেতন নিজে ঠিক করা, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সাথে কাজ করা সুযোগ, দলগত কাজের সুযোগ, পড়ালেখার পাশাপাশি কাজের সুযোগ, নিজের মন মতো কাজের পরিবেশ ইত্যাদি।
অসুবিধাঃ প্রতিষ্ঠিত হতে সময় লাগে, সব মাসে সমান উপার্জন হয় না, অতিরিক্ত কাজের কারণে শারীরিক সমস্যা, দীর্ঘ সময় একই জায়াগায় বসে কাজ করতে হয়, একাকীত্বের মাধ্যমে মানুষ অবসাদগ্রস্ত হয়ে যায়, প্রায়শই ঘুমের নানা রকম সমস্যায় সম্মুখীন হন ফ্রিল্যান্সাররা। কারন দেখা যায় আমাদের দেশে যখন রাত, ক্লায়েন্টের দেশে তখন দিন।
ফ্রিল্যান্সিং (Freelancing) কাদের জন্য:
- যাদের অতিরিক্ত লোভ নেই।
- যারা কাজ শেখার ধৈর্য রাখে।
- যারা শর্টকাটে টাকা আয় করতে চায় না।
- যাদের জীবনে কিছু করার প্রবল ইচ্ছে আছে।
- যারা সৎ পথে জীবিকা নির্বাহ করতে চায়।
- যাদের শেখার প্রবণতা আছে।
শেষ কথাঃ
ফ্রিল্যান্সিং (Freelancing) ও আউটসোর্সিং (Outsourcing) নিয়ে বিস্তারিত আলোচনায় বুজা যায় যে, নিয়ম মেনে কাজ করলে ফ্রিল্যান্সিং এর অসুবিধাগুলোকে খুব সহজেই এড়িয়ে চলা যাবে এবং সফলতা পাওয়া যাবে।
আপনার পোস্টটি খুবই তথ্যবহুল এবং উপকারী! আমি এর বিষয়বস্তু খুব পছন্দ করেছি। দয়া করে আরও এ ধরনের পোস্ট শেয়ার করুন। ধন্যবাদ!
ReplyDeleteনিচের দেওয়া আর্টিকেল পড়তে পারেন।
ফ্রিল্যান্সিং কি? ফ্রিল্যান্সিং এর A টু Z গাইডলাইন
Post a Comment