শর্ট ভিডিও (Shorts Video) থেকে আয়

 YouTube, Instagram, TikTok, এবং Facebook-এর মতো প্ল্যাটফর্মে monetization এর মাধ্যমে সর্ট ভিডিও থেকে আয়ের সুযোগ আছে। এ জন্য Shorts ভিডিও থেকে উপার্জন দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। ক্রিয়েটররা YouTube-এর Shorts Feeds, Instagram Reels, Facebook Reels monetization প্রোগ্রামের মাধ্যমে সরাসরি উপার্জন করতে পারে, যেখানে তারা তাদের ভিডিওর জনপ্রিয়তার উপর ভিত্তি করে অর্থপ্রদান করে। ব্র্যান্ড স্পনসরশিপ থেকেও উল্লেখযোগ্য পরিমান আয় করা যায়। 


শর্ট ভিডিও (Shorts Video)
শর্ট ভিডিও (Shorts Video) থেকে আয়

শর্ট ভিডিও (Shorts Video) থেকে আয় করার কিছু জনপ্রিয় উপায় নিচে দেওয়া হলো:

১. মনেটাইজেশন প্রোগ্রাম (Monetization program)

শর্টস মনেটাইজেশন প্রোগ্রাম (Shorts Monetization program) হলো একটি বিশেষ আয়ের পদ্ধতি, যা বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে শর্ট ভিডিও (Shorts Video)নির্মাতাদের জন্য চালু করা হয়েছে। এ প্রোগ্রামের আওতায় কনটেন্ট ক্রিয়েটররা (Content creator) তাদের জনপ্রিয় ভিডিও থেকে সরাসরি অর্থ আয় করতে পারেন। নিচে কয়েকটি জনপ্রিয় প্ল্যাটফর্মের শর্টস মনেটাইজেশন প্রোগ্রাম সম্পর্কে আলোচনা করা হলো:

* ইউটিউব শর্টস মনেটাইজেশন (Youtube Shorts Monetization)

ইউটিউব তাদের শর্টস ফান্ড (Youtube Shorts Feeds) চালু করেছে, যেখানে সারা বিশ্বের শর্টস নির্মাতাদের জন্য একটি বিশাল তহবিল বরাদ্দ রাখা হয়েছে। ইউটিউব পার্টনার প্রোগ্রাম (YPP) এর মাধ্যমে ক্রিয়েটররা তাদের ভিডিওতে বিজ্ঞাপন চালিয়ে আয় করতে পারেন। 

ইউটিউব শর্টস মনেটাইজেশন (Youtube Shorts Monetization) করার জন্য কয়েকটি উপায় আছে। ইউটিউব শর্টস ভিডিও থেকে আয় করতে চাইলে আপনাকে কিছু নির্দিষ্ট ক্রাইটেরিয়া পূরণ করতে হবে এবং বিভিন্ন মনেটাইজেশন (Monetization)পদ্ধতি ব্যবহার করতে হবে। নিচে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো:

* ইউটিউব শর্টস ফান্ড (Youtube Shorts Fund)

* Youtube Shorts Fund (ইউটিউব শর্টস ফান্ড) হলো ইউটিউবের একটি বিশেষ প্রোগ্রাম, যা শর্টস নির্মাতাদের জন্য বরাদ্দ করা হয়েছে।

* ইউটিউব মাসিক ভিত্তিতে কন্টেন্ট নির্মাতাদের শর্টস ফান্ডের মাধ্যমে অর্থ প্রদান করে।

* যদি আপনার (Shorts Video) শর্টস ভিডিওগুলো ভাল পারফর্ম করে (যেমন: বেশি ভিউ ও এনগেজমেন্ট থাকে), তাহলে Youtube আপনাকে এই ফান্ডের জন্য Monetization দিবে ।

* ফান্ড পাওয়ার জন্য ইউটিউব শর্টস ভিডিওতে প্রচুর ভিউ এবং এনগেজমেন্ট থাকা প্রয়োজন।

২. ইউটিউব পার্টনার প্রোগ্রাম (YPP)

ইউটিউব শর্টসের জন্য মনেটাইজেশনের প্রধান উপায় হলো ইউটিউব পার্টনার প্রোগ্রাম (Youtube partner program)

* ২০২৩ সাল থেকে ইউটিউব শর্টসেও এড (Adds Sharing) শেয়ারিংয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

* শর্টস ভিডিও (Shorts Video)মনেটাইজ করতে হলে আপনাকে ইউটিউব পার্টনার প্রোগ্রামে (Youtube partner program) যোগ দিতে হবে।

* ইউটিউব পার্টনার প্রোগ্রামে  (Youtube partner program) যোগ দিতে হলে ৪,০০০ ঘণ্টা ওয়াচ টাইম অথবা ১০ মিলিয়ন শর্টস ভিউ (৯০ দিনের মধ্যে) থাকতে হবে, এবং ১,০০০ সাবস্ক্রাইবার থাকতে হবে।

৩. স্পন্সরশিপ এবং ব্র্যান্ড ডিল

আপনি ইউটিউবে ভাল ভিউয়ারশিপ গড়ে তুলতে পারলে, বিভিন্ন ব্র্যান্ড আপনার সাথে যোগাযোগ করে স্পন্সরশিপ চুক্তি করতে পারে।

এ ধরনের চুক্তিতে আপনি ব্র্যান্ডের প্রোডাক্ট বা সার্ভিস আপনার শর্টস ভিডিওতে প্রোমোট করতে পারেন।

ব্র্যান্ড ডিল থেকে আপনি সরাসরি অর্থ আয় করতে পারবেন এবং এটি অনেক লাভজনক হতে পারে।

৪. মার্চেন্ডাইজিং (Merchandising)

ইউটিউব থেকে নিজের ব্র্যান্ড বা মার্চেন্ডাইজিং স্টোর প্রমোট করতে পারেন।

নিজের ইউটিউব শর্টস ভিডিওতে টিশার্ট, কাস্টম মগ, বা অন্যান্য প্রোডাক্ট প্রমোট করে ভিউয়ারদের কিনতে উৎসাহিত করতে পারেন।

ইউটিউবের মার্চেন্ডাইজ শেলফ ফিচারের মাধ্যমে আপনি আপনার প্রোডাক্টগুলিকে সরাসরি চ্যানেলে প্রদর্শন করতে পারবেন (যদি আপনার চ্যানেল ইউটিউবের নিয়মাবলী অনুযায়ী কোয়ালিফাই করে)।

৫. এফিলিয়েট মার্কেটিং (Affiliate Marketing)

>ইউটিউব শর্টস ভিডিওতে বিভিন্ন প্রোডাক্টের এফিলিয়েট লিংক শেয়ার করতে পারেন।

>শর্টস ভিডিওতে এফিলিয়েট লিংক ব্যবহার করে দর্শককে প্রোডাক্ট কিনতে উদ্বুদ্ধ করলে আপনি কমিশন পাবেন।

>আমাজন, শেয়ারএসেল, বা অন্যান্য এফিলিয়েট প্রোগ্রামের মাধ্যমে আপনি এফিলিয়েট লিংক অর্জন করতে পারেন।

>শর্ট ভিডিওতে পণ্যের লিঙ্ক শেয়ার করে সেল হলে কমিশন পাওয়া যায়। জনপ্রিয় অ্যাফিলিয়েট প্রোগ্রাম যেমন Amazon Affiliates, ClickBank, ইত্যাদির লিঙ্ক ভিডিওর ক্যাপশন বা বায়োতে যুক্ত করে আয় করা সম্ভব।

৬. ভিউয়ার সাপোর্ট (সুপার থ্যাঙ্কস, চ্যানেল মেম্বারশিপ)

>ইউটিউব সুপার থ্যাঙ্কস ও চ্যানেল মেম্বারশিপ অফার করে, যেগুলো ভিউয়ারদের আপনার কন্টেন্ট সাপোর্ট করার সুযোগ দেয়।
>সুপার থ্যাঙ্কস ও মেম্বারশিপ অপশনের মাধ্যমে ভিউয়াররা আপনাকে সরাসরি আর্থিক সাহায্য করতে পারে।
>এই উপায়গুলো অনুসরণ করলে আপনি ইউটিউব শর্টস থেকে ভাল উপার্জন করতে পারবেন। মূলত, কন্টেন্ট মানসম্মত ও আকর্ষণীয় হলে ইউটিউব শর্টস মনেটাইজেশনে সফল হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি।

ফেসবুক এবং ইনস্টাগ্রাম রিলস বোনাস (Facebook & Instagram Reels Monetization)

ফেসবুক এবং ইনস্টাগ্রাম,(Facebook & Instagram) যা মেটা দ্বারা পরিচালিত, তাদের রিলস কনটেন্টের জন্য রিলস বোনাস প্রোগ্রাম চালু করেছে। বিভিন্ন দেশে নির্বাচিত ক্রিয়েটরদের নির্দিষ্ট রিলস ভিডিওগুলির ওপর ভিত্তি করে আর্থিক পুরস্কার দেওয়া হয়। এছাড়াও, ইনস্টাগ্রাম রিলস মনেটাইজেশনের (Instagram Reels Monetization) জন্য ব্র্যান্ড স্পন্সরশিপ পেতেও ক্রিয়েটররা সুবিধা পায়।

টিকটক মনেটাইজেশন (TikTok Monetization)

টিকটক তাদের নিজস্ব ক্রিয়েটর ফান্ড প্রোগ্রাম চালু করেছে, যা জনপ্রিয় ভিডিও নির্মাতাদের পুরস্কৃত করে। ক্রিয়েটর ফান্ডে অংশ নিতে হলে নির্দিষ্ট অনুসারী সংখ্যা ও ভিউ থাকতে হয়। তবে, টিকটকে সরাসরি বিজ্ঞাপন চালিয়ে আয় করার সুবিধা এখনো সীমিত, তাই অনেক ক্রিয়েটর স্পন্সরশিপ এবং অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর মাধ্যমে আয় করে থাকেন।

স্ন্যাপচ্যাট স্পটলাইট (snapchat monetization)

স্ন্যাপচ্যাটের স্পটলাইট ফিচারেও মনেটাইজেশন প্রোগ্রাম রয়েছে, যেখানে শর্ট ভিডিও (Shorts Video) শেয়ার করে আয়ের সুযোগ রয়েছে। স্পটলাইট ফিচারের ক্ষেত্রে ভিডিওগুলির জনপ্রিয়তা অনুযায়ী নগদ অর্থ প্রদান করা হয়।

এসব মনেটাইজেশন প্রোগ্রাম (Monetization program) ব্যবহার করে কনটেন্ট ক্রিয়েটররা এখন তাদের (Shorts Video) শর্ট ভিডিওগুলিকে আয়ের একটি বড় উৎসে পরিণত করতে পারেন। নিয়মিত জনপ্রিয় ও আকর্ষণীয় কনটেন্ট তৈরি করলে এই প্রোগ্রামগুলো থেকে ভালো পরিমাণে অর্থ উপার্জন করা সম্ভব।

২. স্পন্সরশিপ ও ব্র্যান্ড পার্টনারশিপ

জনপ্রিয় ব্র্যান্ডগুলো প্রায়ই ক্রিয়েটরদের মাধ্যমে তাদের পণ্য প্রচার করে থাকে। ভিডিওর মাধ্যমে পণ্য প্রোমোট করে স্পন্সরশিপ ফি পাওয়া যায়।

ন্যাচারাল ও আকর্ষণীয়ভাবে ব্র্যান্ড ইন্টিগ্রেট করলে এই ধরনের আয় বাড়ানোর সম্ভাবনা বেশি থাকে।

. লাইভ স্ট্রিমিং গিফটস এবং টিপস

টিকটক, ইউটিউব লাইভ বা ইনস্টাগ্রাম লাইভে ভক্তদের কাছ থেকে গিফটস, টিপস বা ডোনেশন পাওয়া যায়।

লাইভ স্ট্রিমিং করলে ভক্তরা ভার্চুয়াল উপহার পাঠিয়ে ক্রিয়েটরকে সমর্থন করতে পারেন, যা পরবর্তীতে নগদে রূপান্তরযোগ্য।

শর্ট ভিডিও (Shorts Video) থেকে আয়

. মার্চেন্ডাইজ বিক্রি

ক্রিয়েটররা তাদের নিজস্ব মার্চেন্ডাইজ (যেমন টি-শার্ট, মগ, হুডি) তৈরি করে শর্ট ভিডিওর মাধ্যমে প্রচার করে বিক্রি করতে পারেন।

শপিফাই, টিজপ্রিং ইত্যাদি প্ল্যাটফর্মে স্টোর খুলে পণ্য বিক্রি করা সহজ।


. প্রিমিয়াম কন্টেন্ট বা মেম্বারশিপ বিক্রি

বিশেষ কন্টেন্টের জন্য সাবস্ক্রিপশন ফি ধার্য করে আয় করা সম্ভব। প্যাট্রিয়ন, কোফি বা ইউটিউবের মেম্বারশিপ প্রোগ্রামের মাধ্যমে ভক্তরা নিয়মিত অর্থ প্রদান করে কন্টেন্ট অ্যাক্সেস করতে পারে।

. ফ্রিল্যান্স সার্ভিস প্রচার

যদি ভিডিও এডিটিং, কপিরাইটিং, ডিজাইনিং ইত্যাদি সার্ভিসে দক্ষ হন, তাহলে ভিডিওর মাধ্যমে এসব সার্ভিস প্রচার করে ক্লায়েন্ট আকর্ষণ করা সম্ভব।

. ই-লার্নিং কোর্স বা ইবুক বিক্রি

ভিডিওর মাধ্যমে নির্দিষ্ট বিষয়ে টিপস বা টিউটোরিয়াল শেয়ার করে নিজের কোর্স বা ইবুক বিক্রি করতে পারেন। এতে ক্রিয়েটর হিসেবে আপনার প্রফেশনাল অবস্থান আরও মজবুত হবে।

এসব উপায় অনুসরণ করে শর্ট ভিডিও তৈরি ও শেয়ারের মাধ্যমে আয় করতে পারবেন। সফলতার জন্য নিয়মিত, মানসম্পন্ন ও আকর্ষণীয় কন্টেন্ট তৈরি করা জরুরি।



ধন্যবাদ আমাদের সাথে থাকার জন্য, আপনার উপদেশ আমাদেরকে অনুপেরনা যোগাবে।

আমাদের অনান্য আর্টিকেল পড়ুনঃ





Post a Comment

Previous Post Next Post

Comments